স্টাফ রিপোর্টার
বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের ব্যাপারে কোন ছাড় দেওয়া হবে না মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডাঃ শফিকুর রহমান বলেন, এ ক্ষেত্রে ’আমরা সিমেন্টের মত’।
বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে দেশের চলমান পরিস্থিতিতে জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠায় কয়েকটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
সংলাপের পর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর সাংবাদিকদের বলেন, “দল-মত আমাদের ভিন্ন, আদর্শ আমাদের ভিন্ন, পথ আমাদের এক। পথটা হচ্ছে বাংলাদেশকে রক্ষা করতে হবে। দেশটা শুধু রাজনৈতিক দলের নয়; দেশের সকল জণগণের।
আমরা সবাই এক বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছি। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে কোন ছাড় নয়, এ ক্ষেত্রে আমরা সিমেন্টের মত।
তিনি বলেন, “আগামীর বাংলাদেশ গঠনে পথে পথে আমরা বিভিন্ন পরীক্ষার সম্মুখিন হব। বিশেষ করে পার্শ্ববর্তী দেশ, তারা আমাদের প্রতিবেশী। আমরা তাদের সঙ্গে প্রতিবেশীসুলভ সম্পর্ক চাই। কিন্তু তাদের সাম্প্রতিক কিছু আচরণ উসকানিমূলক, অসহিংস ও অগ্রহণযোগ্য।
মিথ্যা তথ্যে নির্ভর করে বাংলাদেশকে কলুষিত করার জন্য, এই সরকার এবং জনগণকে ব্যর্থ করার জন্য তারা দুনিয়ার বিভিন্ন জায়গায় অপপ্রয়াস ও অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমরা সবাই সম্মিলিতভাবে এর নিন্দা জানিয়েছি।”
জামায়াতের আমির বলেন, “একটি বিষয় আমরা সাফ জানিয়ে দিয়েছি, চরমপন্থা যে দিক থেকেই আসুক, আমরা তাকে ঘৃণা করি। এটিকে কোনো অবস্থায় প্রশ্রয় দেব না এবং মেনেও নেব না।”
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘‘স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ আছি। আমরা সবাই একসঙ্গে হয়েছি, ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। আমাদের নিজেদের মধ্যে রাজনৈতিক মতাদর্শগত যত পার্থক্য থাকুক না কেন, এই প্রশ্নে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ আছি।’’
ভারতের সঙ্গে সম্পাদিত সব চুক্তি যাচাই বাছাইয়ের প্রস্তাব দেওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘‘যেসব চুক্তি আমাদের জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থি, সেগুলো যেন বাতিল করা হয়, সেজন্য রাজনৈতিক দলগুলো সরকারের কাছে প্রস্তাব দিয়েছে।’’
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারি জোনায়েদ সাকি বলেন, “বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের বিষয়ে একটি জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার জন্য আমরা ঐকমত্য হয়েছি। আমরা মনে করি, সরকার, রাজনৈতিক দল, শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষসহ দেশের সব জনগণ আজ ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের জন্য এক হয়ে লড়াই করবে।”
আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জমান ফুয়াদ বলেন, “সংলাপে নির্বাচন নিয়ে কোনো কথা হয়নি। তিনটি বিষয় নিয়ে কথা বলার জন্য প্রধান উপদেষ্টা ডেকেছিলেন। এর মধ্যে রয়েছে, ভারতসহ সারা বিশ্বে বাংলাদেশ বিরোধী যেসব প্রপাগান্ডা চলছে, এগুলোর ব্যাপারে রাষ্ট্র হিসেবে আমাদের করণীয় কী?
আরেকটি বিষয় হল, আগরতলায় বাংলাদেশ ডেপুটি হাই কমিশনে হামলা, বাংলাদেশের পতাকা অবমাননা এবং দেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে যে গল্প এবং উপন্যাস সারা দুনিয়াতে চলছে, সে বিষয়ে করণীয় কী?”
সংলাপে উপস্থিত ছিলেন গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি নুরুল হক নুর (ভিপি নুর)। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের ৫৩ বছরের ইতিহাসে আজ একটি নতুন অধ্যায় রচিত হয়েছে। দেশের স্বার্থে জাতীয় ঐক্য এবং সংহতি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সর্বদলীয় সভা এই অন্তর্বর্তী সরকার করেছে। এর আগে কোনো সরকার এটি করতে পারেনি।”