
কালিহাতীর এলেঙ্গায় অপরাধের থাবা: স্বেচ্ছাসেবী টহল দল গঠনের যৌথ উদ্যোগ
শুভ্র মজুমদার, কালিহাতী(টাঙ্গাইল)প্রতিনিধিঃ
উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার খ্যাত টাঙ্গাইলের কালিহাতীর এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ড ও বাজার এলাকায় চুরি, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা ও নারী পাচারসহ নানা অপরাধের ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বেড়ে চলেছে। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় এলেঙ্গা প্রেসক্লাব, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, সরকারি শামসুল হক কলেজ শাখার বাংলাদেশ রোভার স্কাউটস ও বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সদস্যরা সম্মিলিতভাবে স্বেচ্ছাসেবী নিরাপত্তা টিম গঠনের উদ্যোগ নিয়েছেন। এই টিমের আওতায় প্রতি রাতে ৫ জন সাংবাদিক, ১০ জন পুলিশ ও ১৫ জন নৈশ্যপ্রহরী নিয়ে একটি টহল দল কাজ করবে, যা এলেঙ্গার বাজার, দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে অভিযোগ করেছেন, এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ড ব্যবসায়ী সমিতি নামে একটি গোষ্ঠী নিয়মিত কোটি কোটি টাকা চাঁদা আদায় করলেও সেই অর্থ ব্যবসায়ীদের সুরক্ষা বা উন্নয়নে ব্যয় করা হয় না। তাদের দাবি, এই সমিতির কোনো বৈধ রেজিস্ট্রেশন বা নিয়মিত নির্বাচন নেই, ফলে এটি একটি স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। চাঁদাবাজির অর্থ কোথায় যায়—এ নিয়ে প্রশ্ন তুলে ব্যবসায়ীরা স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির দাবি জানিয়েছেন।
অন্যদিকে, এলেঙ্গা পৌরসভা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ট্রেড লাইসেন্স ও ট্যাক্স আদায় করলেও এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, পৌরসভার উদাসীনতাই অপরাধীদের সাহস জোগাচ্ছে। রাতের অন্ধকারে ডাকাতি, মাদক কারবারসহ নানা অপরাধমূলক কার্যক্রম অনায়াসে বেড়ে চলছে।
এলেঙ্গার সচেতন নাগরিক ও সংগঠনগুলো মনে করছেন, শুধু পুলিশি পদক্ষেপই যথেষ্ট নয়, স্থানীয় প্রশাসন, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের সমন্বয়ে টেকসই নিরাপত্তা কৌশল প্রণয়ন জরুরি। স্বেচ্ছাসেবী টহল দলকে ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে দেখলেও তারা দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের জন্য ব্যবসায়ী সমিতির পুনর্গঠন, পৌরসভার জবাবদিহি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর তৎপরতা চেয়েছেন। এলেঙ্গাকে অপরাধমুক্ত করতে এ উদ্যোগের সফল বাস্তবায়ন এখন সকলের কাম্য।
অপরাধের ছায়া দূর করতে স্থানীয়দের ঐক্য, প্রশাসনের দৃঢ়তা আর স্বচ্ছতার সংস্কৃতি—এলেঙ্গার ভবিষ্যৎ এই তিন সূত্রেই নিহিত।