
নাফনদী থেকে ৫ টি মাছ ধরার ট্রলারসহ বাংলাদেশি ২২ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি
শামসুল আলম শারেক,টেকনাফ (কক্সবাজার)
কক্সবাজারে টেকনাফের সেন্টমার্টিন দ্বীপের কাছাকাছি সাগর থেকে পাঁচটি মাছ ধরার ট্রলারসহ বাংলাদেশি অন্তত ২২ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্টি আরাকান আর্মি। এর মধ্যে দুইটি ট্রলারের ১১ জেলের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেলেও অন্যদের জানা যায়নি।
মঙ্গলবার সকাল ১১ টার টেকনাফের সেন্টমার্টিন দ্বীপের কাছাকাছি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে জানান, বিজিবির টেকনাফ ২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আশিকুর রহমান।
তিনি জানান, ট্রলার দুইটির মালিক টেকনাফ পৌর এলাকার বাসিন্দা। এর মধ্যে টেকনাফ কায়ুকখালী খাল বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালামের মালিকাধীন ট্রলারে ৫ জন এবং তার ভাতিজা মো. শাওনের মালিকানাধীন ট্রলারে ৬ জন জেলে রয়েছে। দুইটি ট্রলারের ১ জন ছাড়া অন্য সব জেলে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গা নাগরিক।
আরও তিনটি ট্রলারসহ জেলেদের ধরে নিয়ে যাওয়ার তথ্য পাওয়া গেলেও পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলে জানান বিজিবির এ কর্মকর্তা।
টেকনাফ কায়ুকখালী খাল বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম বলেন, সকালে সেন্টমার্টিন দ্বীপের কাছাকাছি সাগরে বাংলাদেশের জলসীমায় তার ও ভাতিজার মালিকানাধীন দুইটি ট্রলার মাছ ধরছিল। এক পর্যায়ে মিয়ানমার দিক থেকে স্পিডবোট যোগে আসা একদল লোক ট্রলার দুইটিকে অস্ত্রের মুখে জিন্মি করে। পরে তাদের জিন্মি করে মিয়ানমার অভ্যন্তরে নিয়ে যায়।
তবে ঘটনার পর থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া জেলেদের সঙ্গে কোন ধরণের যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি বলে জানান তিনি।
বোট মালিকদের এ নেতা জানিয়েছেন, ঘটনাটি শোনার পর বিষয়টি টেকনাফের ইউএনও, বিজিবি ও কোস্টগার্ডের সংশ্লিষ্টদের অবহিত করা হয়েছে।
এ নিয়ে বিজিবির টেকনাফ ২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান বলেন, সেন্টমার্টিনের কাছাকাছি সাগর থেকে মাছ ধরার দুইটি ট্রলারসহ ১১ জেলেকে ধরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি শুনেছেন। ঘটনার ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।
এছাড়া টেকনাফের কায়ুকখালী ঘাটের একটি এবং শাহপরীরদ্বীপ এলাকার দুইটি ট্রলারসহ জেলেদেরও ধরে নিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তাদের তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।
টেকনাফের ইউএনও শেখ এহসান উদ্দিন জানান, সকালে সেন্টমার্টিনের কাছাকাছি সাগর থেকে ৫ টি মাছ ধরার ট্রলারসহ অন্তত ২২ জনের বেশী বাংলাদেশি জেলেকে আরাকান আর্মি ধরে নিয়ে যাওয়ার খবর শুনেছেন। এর মধ্যে তিনটি ট্রলার টেকনাফ এলাকার এবং অপর দুইটি ট্রলার শাহপরীরদ্বীপ এলাকার।
তিনি জানান, টেকনাফের দুই ট্রলারের ১১ জেলের পরিচয় মিলেছে। তবে অপর তিন ট্রলারের জেলেদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ওই তিন ট্রলারে আরও অন্তত ১২ থেকে ১৫ জন জেলে থাকতে পারে।####