
ফেইসবুক পেজ থেকে জেলা বিএনপির অর্থসম্পাদক আব্দুল্লাহর বিরুদ্ধে মিথ্যা অপ প্রচার চালানোর প্রতিবাদ
শামসুল আলম শারেক, টেকনাফ ( কক্সবাজার)।
গতকাল চট্টগ্রাম ট্রিউবিউন নামের একটি ফেসবুক আইডি ও পিন পত্রিকা থেকে “টেকনাফের নতুন বদি বিএনপির আব্দুল্লাহ ?” শিরোনাম দিয়ে একটি ভিডিও কন্টেন্ট পোস্ট করা হয়েছে। উক্ত ভিডিও কন্টেন্টটি আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে। ভিডিওটি একটি কাল্পনিক, মিথ্যা, ভুয়া ও মনগড়া। আমি উক্ত ভিডিওতে আমি এবং আমার পরিবারের বিরুদ্ধে প্রচারিত সব মিথ্যা তথ্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
আমি আমি উখিয়া- টেকনাফে জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি’র) নির্যাতিত একজন কর্মী। গত স্বৈরাচার শেখ হাসিনা রাষ্ট্র ক্ষমতা থাকার সময় উখিয়া – টেকনাফের সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হয়েছি। আমার বিরুদ্ধে ৩৬ টি মিথ্যা মামলা হয়েছে। প্রায় ২০ টি মামলায় আমি প্রতিদ্বন্দিতা করে খালাস পেয়েছি বর্তমানে। স্বৈরাচার সরকার পতনের পরে ৫ আগস্ট রাতে আমার তিন টা ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে লুটপাট করে নিয়ে যায় টাকা সহ বিভিন্ন মূল্যবান জিনিস পত্র। যে ঘটনায় আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। বর্তমানেও আমার বিরুদ্ধে কিন্তু একটা মহল মিথ্যা ও ভুয়া অপপ্রচার চালাচ্ছে।
চট্টগ্রাম ট্রিবিউন নামে ফেসবুক আইডিতে প্রচারিত ভিডিওতে উল্লেখ করা হয়, ইসমাইল নামে একজনের জমি দখলের বিষয়ে। প্রকৃতপক্ষে ইসমাইলের সাথে আমার ব্যক্তিগত কোন বিরোধ নেই। প্রতিবেদনে যে জমির কথা বলা হয়েছে তা ইসমাইলের মা ও বাবার নামে কেনা। উনারা জমি কিনেছেন ১৯৮৪ সালে। আর আমি জমি কিনেছি ২০১১ সালে। তাদের দলিলের দাতা, জমির দাগ ও খতিয়ান সম্পূর্ণ ভিন্ন। আমি তাদের কাছ থেকে জমি কিনি নাই। আমার দলিলের দাতা, দাগ ও খতিয়ান আলাদা।
তারা তাদের দলিল মতে দিয়ারা খতিয়ান না করে আমার দখলের জমি নিয়ে দিয়ারা খতিয়ান করে। বিষয়টি জানার সাথে সাথেই আমি বিজ্ঞ দেওয়ানী আদালতে মামলা করেছি। দেওয়ানী আদালতে হাজির হয়ে ইসমাইল জবাব দেয়। সে মামলায় উনারা পরাজিত হবেন বুঝতে পেরেই আমার বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলা করেন। এই ফৌজদারী মামলার বিরুদ্ধে আমি মহামান্য হাইকোর্টে দরখাস্ত করলে তাদের ফৌজদারী মামলার কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়। মামলার ফলাফল যাই হোক, ইসমাইলের দলিল মতে তাঁদের খরিদা জমি আমার দখলে থাকলে আমি যে কোন মুহূর্তে তা ছেড়ে দিতে প্রস্তুত।
পরবর্তী এই ভুয়া ভিডিও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ৫ আগস্টের রাতে টেকনাফ উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি নুরুল হোসাইনে বাড়িতে আমার নেতৃত্বে হামলা চালিয়ে ভাঙচুরে অভিযোগ আনা হয় কিন্তু অভিযোগের উপর ভিত্তি করে কোন তথ্য ভিডিও প্রতিবেদনে দেখাতে সক্ষম হয়নি। উক্ত অভিযোগ বাড়ির মালিক টেকনাফ উপজেলা প্রেসক্লাবে সভাপতি নুরুল হোসাইন এবং তার পরিবার এমন অভিযোগ কোথায় করেনি বলে উল্লেখ করে সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও বক্তব্য প্রচার করে নিজেরা। যে ভিডিও বক্তব্য আমার কাছে সংগ্রহ করা আছে। ওই ভিডিও বক্তব্যে নুরুল হোসাইন নিজে দাবি করে আব্দুল্লাহ এবং আব্দুল্লাহ পরিবারের নেতৃত্বে আমার বাড়িতে হামলা করেনি। স্থানীয় কিছু দুষ্কৃতকারি ৫ আগস্টের ফায়দা নিয়ে আমার বাড়িতে হামলা করেছে। তিনি আরো জানান,এই প্রতিবেদনের জন্য প্রতিবেদক আমার কাছে কল দিয়ে জানতে চাই আব্দুল্লাহ নেতৃত্বে হামলা হয়েছে কিনা? উত্তরে বলেছিলাম আব্দুল্লাহ নেতৃত্বে কোন হামলা করা হয়নি। তাদের পরিবারের সাথে আমার কোন বিরোধ নেই। কিন্তু প্রতিবেদক তা প্রকাশ করেনি। তাহলে কি উদেশ্যে আমার বিরুদ্ধে এধরণের মিথ্যা ভুয়া তথ্য দিয়ে প্রতিবেদন প্রচার করেছে তা বোধগম্য নয়।
এই ভুয়া প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করে, আমার নেতৃত্বে গাড়ি থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্থানে চাঁদবাজির কথা। কিন্তু এই প্রতিবেদনে এমন কোন সঠিক তথ্য সামলে তুলে ধরতে সক্ষম হয়নি। ৫ আগস্টের পর টেকনাফ স্টেশন থেকে মুক্তি কামী জনতা চাঁদাবাজদের বিতাড়িত করেছে। চাঁদাবাজরা আর কখনো ফিরে আসতে পারবে না ইনশাআল্লাহ। আমার নামে কেউ চাঁদাবাজি করে থাকলে সাথে সাথে তাকে ধরে প্রশাসনের হাতে সোপর্দ করুন । না পারলে আমাকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করুন প্রয়োজনে আমি নিজে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা নিয়ে চাঁদাবাজদের প্রতিহত করবো।
গত ২০০৭ সালের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর উখিয়া টেকনাফের রাজনীতির নিয়ন্ত্রণ দুই পরিবারের মধ্যে ভাগাভাগি হয়। দেশের প্রধান তিনটি দলের উখিয়া-টেকনাফের নেতৃত্ব ওই দুই পরিবারের মধ্যে ভাগাভাগি হয়। যেই দলই ক্ষমতায় আসুক ওই দুই পরিবারের সদস্যরা ক্ষমতা ভোগ করবে। এই দুই পরিবার তিনটি দলের দলীয় প্রভাব খাটিয়ে দুই পরিবারের বাহিরের কোন নেতৃত্ব গড়ে উঠতে দেবে না।
আমি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শের সংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের রাজনীতিতে অবদান রাখার মধ্য দিয়ে দলের কর্মী সমর্থকরা আমাকে বর্তমান অবস্থায় এনেছে। আমার পিতা আমৃত্যু বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের রাজনীতিতে ছিলেন। আমার দুই ভাই একই রাজনীতিতে বিশ্বাসি। দলের সুদিন কিংবা দুর্দিনে আমরা কখনোই দলের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করিনি, দল বদলাইনি, কারো সাথে আপোষ করিনি। ২০০৯ ও ২০১৪ সালে উপজেলা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ওই দুই পরিবারের ষড়যন্ত্রে আমি হেরে গেলে ও আমার প্রাণপ্রিয় দলকে হারতে দেইনি। দলের আপামর কর্মী সমর্থক নিয়ে প্রতিবাদের ধারা অদ্যাবধি অব্যাহত রেখেছি। ১৭ বছরের দীর্ঘ সংগ্রামে আমি আমার সবচেয়ে বড় অর্জন আমি আমার পুত্রকে হারিয়েছি। আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের উপরে বারংবার হামলা হয়েছে। ৫ আগস্ট বিপ্লবের পর সারা দেশের আওয়ামীলীগ পালিয়ে গেছে। কিন্তু টেকনাফের আওয়ামী লীগ দুই পরিবারের নেতৃত্বাধিন দুটি দলে মিশে গেছে। আমার দলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা এর প্রতিবাদ করে যাচ্ছে।
এমন মনগড়া ভূয়া মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে তা তীব্র নিন্দা প্রতিবাদ জানাই।
প্রতিবাদকারী
মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ
অর্থ সম্পাদক, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি’র)কক্সবাজার জেলা। ###